চীনের সম্মেলন থেকে কী বার্তা নিয়ে এলেন মোদি?

চীনের সম্মেলন থেকে কী বার্তা নিয়ে এলেন মোদি?

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চীনের তিয়ানজিনে দুদিনের সফর শেষ করে সোমবার রাতে দিল্লি ফিরেছেন। তিনি সেখানে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলাদা বৈঠকও করেন।

বিশ্ববাজারে মার্কিন শুল্ক হারের চাপ সামলাতে ভারতের জন্য এ সফর ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। মোদি এ সফরের মাধ্যমে ওয়াশিংটনকে ইঙ্গিত দিতে চেয়েছেন যে, ভারত রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী।

নিজের অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে মোদি লিখেছেন, ‘চীনে একটি ফলপ্রসূ সফর শেষ করলাম। এসসিও সম্মেলনে অংশ নিয়েছি, গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেছি এবং ভারতের অবস্থান তুলে ধরেছি।’

একই সঙ্গে তিনি চীনা সরকার ও জনগণকে সম্মেলন সফল করার জন্য ধন্যবাদও জানিয়েছেন।

চীন, রাশিয়া ও ভারত দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা করছে এসসিওকে পশ্চিমাদের ন্যাটোর বিকল্প হিসেবে তুলে ধরতে। যদিও মোদি নিজে এ সম্মেলনে অংশ নিতেন না; বরং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকরকে পাঠাতেন। তবে এবার তিনি নিজেই তিয়ানজিনের সম্মেলনে যোগ দেন, যা গত সাত বছরের মধ্যে চীনে তার প্রথম সফর।

সফরের প্রথম দিনে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে মোদি বলেন, ‘ভারত ও চীনের সহযোগিতা সমগ্র মানবজাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।’

শি জিনপিং এ সময় মন্তব্য করেন, ‘বিশ্ব আজ রূপান্তরের পথে। এশিয়ার ড্রাগন আর হাতি এক সঙ্গে এগোলেই তা সময়ের দাবি পূরণ করবে। আমরা প্রাচীন সভ্যতা এবং সবচেয়ে জনবহুল দেশ। আমাদের ভালো বন্ধু এবং ভালো প্রতিবেশী হয়ে এক সঙ্গে এগোতে হবে।’

মোদির সঙ্গে বৈঠকে শি জিনপিং আরও বলেন, ভারত-চীন প্রতিপক্ষ নয়, বরং সহযোগিতার অংশীদার।

অন্যদিকে মোদি ঘোষণা করেন, দু’দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান পরিষেবা শীঘ্রই চালু হবে, যা দীর্ঘ পাঁচ বছর বন্ধ ছিল।

এসসিও সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে মোদি, পুতিন ও শি জিনপিং একসঙ্গে সৌহার্দ্যের দৃশ্য উপস্থাপন করেন। তিন নেতার মধ্যে করমর্দন, আলিঙ্গন ও হাস্যরসিকতার মাধ্যমে অনন্য অন্তরঙ্গ মুহূর্ত তৈরি হয়।

মোদি ওই সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘তিয়ানজিনে কথোপকথন অব্যাহত। প্রেসিডেন্ট পুতিন ও শি জিনপিংর সঙ্গে মতবিনিময়।’

চীনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মোদি ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ নিয়ে ভারতের আপত্তিও উত্থাপন করেন। কারণ এ প্রকল্প পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের মধ্য দিয়ে যায়, যা ভারতের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে সংযুক্ত। তিনি বলেন, ‘সংযোগ তখনই অর্থবহ, যখন তা সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করে।’

মোদির বক্তব্য, ভারত ইরানের চাবাহার বন্দরের মাধ্যমে আফগানিস্তান ও মধ্য এশিয়ার সঙ্গে টেকসই সংযোগ স্থাপন করতে চায়। চাবাহার বন্দর মূলত ভারতের অর্থায়নে নির্মিত।

এদিকে সম্মেলনের শেষে মোদি ও প্রেসিডেন্ট পুতিন একই লিমুজিনে বসে শহরের রিটজ কার্লটন হোটেলের উদ্দেশ্যে রওনা হন। গাড়িতে ঘণ্টাব্যাপী একান্তে আলোচনা হয় তাদের।

রুশ সংবাদমাধ্যম জানায়, ‘এই কথোপকথন ছিল সম্পূর্ণ গোপন।’

বৈঠকে দুই নেতা ভারত-রাশিয়ার কৌশলগত অংশীদারিত্ব জোরদার করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন এবং ইউক্রেন সংকট নিয়েও আলোচনা করেন।

মোদি এ সময় পুতিনকে ডিসেম্বরের ভারত-রাশিয়া শীর্ষ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, ‘১৪০ কোটি ভারতীয় আপনার জন্য অপেক্ষা করছে।’

জাতীয়

সারাদেশ

আন্তর্জাতিক

বিনোদন

খেলা

ডাকদূত – বিজ্ঞাপন – সার্কুলেশন শর্তাবলি ও নীতিমালা – গোপনীয়তা নীতি – যোগাযোগ – নিউজলেটার