বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সঙ্গে নেপালে আটকে আছেন জনা ১৫ ক্রীড়া সাংবাদিকও, যাদের অনেকের ফেরার কথা ছিল আজ।
নেপাল-বাংলাদেশ দ্বিতীয় ফিফা প্রীতি ম্যাচ বাতিল করার পর গতকালই ফুটবল দলের ঢাকায় ফেরার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ফিরতি ফ্লাইট ছিল বিকেল ৩টায়। কিন্তু টিম হোটেল ক্রাউন ইম্পেরিয়াল থেকে বিমানবন্দরে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। পরে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
ত্রিভুবন বিমানবন্দরের মহাব্যবস্থাপক হংসরাজ পাণ্ডে গতকাল দুপুরে কাঠমান্ডু পোস্টকে বলছিলেন, ‘দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিট থেকে কোঠেশ্বর এলাকায় ধোঁয়া দেখা দেওয়ার পর থেকেই আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ রয়েছে। বিমানবন্দর বন্ধ করা হয়নি, আমরা সেটি করবও না। স্থানীয় যাতায়াতের সমস্যার কারণে ক্রু সদস্যরা বিমানবন্দরে পৌঁছতে পারছেন না। এ অবস্থায় ফ্লাইট উড্ডয়নও সম্ভব হচ্ছে না। নিরাপত্তার কারণে বুদ্ধ এয়ার ছাড়াও বিমান সংস্থাগুলো সব ফ্লাইট স্থগিত করেছে।’
নেপাল-বাংলাদেশ প্রীতি ম্যাচ কভার করতে ঢাকা থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমের অন্তত ১৫ প্রতিনিধি কাঠমান্ডু অবস্থান করছেন। দুই প্রীতি ম্যাচ শেষ করে বেশিরভাগ ক্রীড়া সাংবাদিকের আজই ঢাকায় ফেরার কথা ছিল। বর্তমান অবস্থায় তাদের নির্ধারিত সময়ে ফেরার বিষয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গতকাল ডিবি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ক্রীড়া সাংবাদিক মোহাম্মদ জুবায়ের কাঠমান্ডু থেকে এক জাতীয় গণমাধ্যমকে বলছিলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে যে ক্রীড়া সাংবাদিকরা এখানে এসেছেন, তারা থামেলের মুসলিম চক এলাকার কাছাকাছি জায়গার বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান করছেন। এখানে তেমন নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়নি।’ মোহাম্মদ জুবায়ের আরও বলছিলেন, ‘আন্দোলনের কারণে কাঠমান্ডুর বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ বিপর্যয় ছিল। বাংলাদেশি ক্রীড়া সাংবাদিকরা অবস্থান করছেন—এমন এক হোটেলেও বিদ্যুৎ বিপর্যয় ছিল। তাদের ওই হোটেল ছেড়ে অন্যত্র চলে আসার কথা।’
কাঠমান্ডুর বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে মোহাম্মদ জুবায়ের বলছিলেন, ‘নেপালে বর্তমান কোনো নিরাপত্তা বাহিনী নেই। লুটপাটের ভয়ে হোটেলের ফকট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কাউকে বাইরে যেতে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে।’
তার আগে, গতকাল দুপুরে বাংলাদেশ দলের অবস্থা সম্পর্কে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক ফুটবলার ইকবাল হোসেন বলছিলেন, ‘কাঠমান্ডুর পরিস্থিতি খুব একটা ভালো নয়। আমরা যেখানে অবস্থান করছি, তার আশপাশে চলছে বিক্ষোভ, জ্বালাও-পোড়াও। নিরাপত্তার কারণে ফুটবলাররা হোটেল থেকে বের হতে পারেনি। সবাই টিম হোটেলেই অবস্থান করছেন।’
কাঠমান্ডু থেকে কালবেলাকে জানানো হয়েছে, ‘ম্যাচ কভার করতে যাওয়া বাংলাদেশি এক ক্রীড়া সাংবাদিকের গতকালই ঢাকায় ফেরার ফ্লাইট ছিল। সে অনুযায়ী তিনি বিমানবন্দরে গিয়ে ইমিগ্রেশনও সম্পন্ন করেছিলেন। তারপরই আন্দোলনকারীরা বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়ায় আটকা পড়েছিলেন ওই ক্রীড়া সাংবাদিক। পরে অবরুদ্ধ ওই ক্রীড়া সাংবাদিককে স্থানীয় ক্রীড়া সংবাদিক প্রজ্জল ওলি মোটরসাইকেলে করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে এনেছেন।’
নেপালে আটকে পড়া ক্রীড়া সাংবাদিকরা বাফুফে সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষারের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন, পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে আজ বিশেষ ফ্লাইটে করে জাতীয় দলের ফুটবলারদের ঢাকায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। একই ফ্লাইটে আটকে পড়া ক্রীড়া সাংবাদিকদেরও ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।
সূত্র : কালবেলা