তাওহিদ হৃদয় এবং মেহেদী হাসান মিরাজের ১০১ রানের একটি অসাধারণ জুটি। এই জুটির পরও আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪৮.৫ ওভারে ২২১ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। হাফ সেঞ্চুরি করেন মিরাজ এবং হৃদয় দু’জনই। এই দুই ব্যাটার ছাড়া আফগান বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশের আর কোনো ব্যাটার।
আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। তবে আবুধাবির এই উইকেট দেখেই মনে হচ্ছিল হালকা সবুজ। শুরুতে বোলাররা দারুণ কার্যকরী হতেন হয়তো এই উইকেটে। কিন্তু সেখানে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ! ব্যাট করতে নেমে বোলিং বান্ধব উইকেটে শুরুতেই কিছুটা ব্যাটিং বিপর্যয়ে বাংলাদেশ। ৫৩ রানের মাথায় ৩ উইকেট হারায় টাইগাররা।
ইনিংস ওপেন করতে মাঠে নামেন তানজিদ হাসান তামিম এবং অভিষিক্ত সাইফ হাসান। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ- টানা তিন বলে ক্যাচ তুলেছিলেন সাইফ হাসান ও তানজিদ তামিম। আফগান ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় প্রথম দুই বলে আউট হওয়া থেকে বেঁছে যান সাইফ ও তানজিদ তামিম। কিন্তু চতুর্থ বলে ব্যাটের কানায় লাগিয়ে উইকেটের পেছনে তামিম যে ক্যাচ তুললেন, সেটি ধরতে রহমানুল্লাহ গুরবাজের আর কষ্ট করতে হয়নি।
১৮ রানের মাথা পড়ে প্রথম উইকেট। ১০ বলে ১০ রান করেন তানজদি তামিম। এরপর মাঠে নামেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সাবেক এই অধিনায়ক নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটার। কিন্তু তিনি প্রত্যাশা মোটেও মেটাতে পারলেন না। ৫ বল খেলে ২ রান করে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের বলে হাশমতউল্লাহ শহিদির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান শান্ত। দলীয় রান এ সময় ২৫।
তৃতীয় উইকেটে জুটি বাধেন সাইফ হাসান এবং তাওহিদ হৃদয়। এ দু’জনের ব্যাটে বিপদ কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছিল বাংলাদেশ। ২৮ রানের জুটি গড়েন তারা দু’জন। কিন্তু টি-টোয়েন্টি আর ওয়ানডের মধ্যে হয়তো পার্থক্যটা ধরতে পারেননি সাইফ হাসান। ১২তম ওভারের ৫ম বলে নানগেলিয়া খারোতকে তুলে মারতে গিয়ে ওয়াইডিশ লং অফে রশিদ খানের হাতে ধরা পড়েন তিনি। ততক্ষণে সাইফ হাসানের নামের পাশে যুক্ত হয়েছে ২৬ রান।
একে একে তিনটি উইকেট পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের। ৫৩ রানে তিন উইকেট হারিয়ে যখন ধুঁকতে শুরু করেছিল বাংলাদশে, তখন দলের হাল ধরেন তাওহিদ হৃদয় এবং মেহেদী হাসান মিরাজ।
মিডল অর্ডারে এই দুই ব্যাটার মিলে গড়ে তোলেন ১০১ রানের দারুণ একটি জুটি। এরই মধ্যে হাফ সেঞ্চুরি করেন তারা দু’জনই। তবে, দুর্দান্ত এই জুটিটি ভেঙে গেলো ভুল বোঝাবুঝির কারণে। একটি সিঙ্গেল রান নিতে গিয়ে রানআউট হয়ে যান তাহওহিদ হৃদয়। এ সময় দলের রান ছিল ১৫৪। তাওহিদ হৃদয় ব্যক্তিগতভাবে করেন ৮৫ বলে ৫৬ রান।
হৃদয় আউট হওয়ার পর মেহেদী হাসান মিরাজ এবং নুরুল হাসান সোহান মিলে আরেকটা জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু দলীয় ১৭৫ রানের মাথায় আউট হয়ে যান মিরাজ। ৮৭ বলে ৬০ রান করে আউট হয়ে যান বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক। এরপর আর কোনো ব্যাটারই দাঁড়াতে পারেননি। জাকের আলি অনিক করেন ১০ রান। নুরুল হাসান সোহান নিজের নামের প্রতি কোনো সুবিচার করতে পারেননি। মাত্র ৭ রান করেই আউট হয়ে গেলেন তিনি।
তানজিম হাসান সাকিব শেষ মুহূর্তে ১৭ রান না করলে ২০০ রানও পার হতো না বাংলাদেশের ইনিংস। হাসান মাহমুদ ৫ রান করে আউট হন। ১১ রান করেন তানভির ইসলাম। ৪ রানে অপরাজিত থাকেন তাসকিন আহমেদ।
৩টি করে উইকেট নেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই এবং রশিদ খান। ২ উইকেট নেন এএম গজনফর এবং ১টি উইকেট নেন নানগেলিয়া খারোত।