
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে আল মোস্তফা গ্রুপের বিরুদ্ধে কৃষকদের জমি জোরপূর্বক দখলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার (২৬ জুলাই) রাত ১০টার দিকে উপজেলার আষাঢ়িয়ার চর এলাকায় ঘটে জমি দখলের এ ঘটনা। এ ঘটনায় ২৭ জুলাই রাতে ভুক্তভোগী গৃহবধূ মোসাঃ নাজমা আক্তার বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবৎ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের আষাঢ়িয়ারচর এলাকায় ইউছুফ আলী ও নাজমা আক্তার গংদের পৈত্রিক ও ক্রয় সূত্রের প্রায় দুই একর সম্পত্তি আল মোস্তফা গ্রুপ জোর পূর্বক দখল করার চেষ্টা করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার (২৬ জুলাই) আনুমানিক রাত ১০টার দিকে একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে কোম্পানির পক্ষে ভুক্তভোগীদের জমির উপর জোর পূর্বক টিনের বেড়া নির্মাণ করে। এ সময় টিনের বেড়া দিতে বাধা দিলে তাদের সপরিবারে হত্যা করে লাশগুমের হুমকি দেয় দখলকারীরা। এসময় আতঙ্কিত পরিবার তখন ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশের সহায়তা চায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে কিছু সময় বেড়া নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখে, তবে প্রায় ৩০ মিনিট পর পুলিশ চলে গেলে আবারও নির্মাণ শুরু করে তারা।
অভিযোগকারী মোসাঃ নাজমা আক্তার (৩৫) জানান, আমাদের পৈত্রিক ও ক্রয়সূত্রে প্রাপ্ত এবং দীর্ঘদিন ধরে ঘরবাড়ি তৈরি করে পরিবারসহ বসবাস ও চাষাবাদ করে আসছি। কিন্তু এ জমিতে আল মোস্তফার লোলুপ দৃষ্টি পড়লে কম্পানীর মালিক বিভিন্ন সময় আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, হুমকি ধামকি দিয়ে জমি দখলের চেস্টা করে ব্যর্থ হয়।”
গত ২৬ জুলাই দিবাগত রাত ১০টার দিকে মোস্তফা কামালের নির্দেশে সোনারগাঁ থানা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রউফ ও পিরোজপুর ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল জলিলের নেতৃত্বে প্রায় ২৫-৩০ জনের একটি দল উক্ত জমিতে বেআইনি ভাবে অনুপ্রবেশ করে জোরপূর্বক দখল করে।
বাধা দিতে গেলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করলে আতঙ্কিত হয়ে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশের সহায়তা চায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে কিছু সময় কাজ বন্ধ রাখে, পুলিশ চলে গেলে আবারও দেয়াল নির্মাণ শুরু হয়।
স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বার কেউ জলিল গংদের সহায়তায় এগিয়ে আসেনি বলেও জানান তারা।
ভূক্তভোগীরা আরও জানান, এর আগেও ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ২ তারিখে একই ঘটনার প্রেক্ষিতে সোনারগাঁ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর ৭৭) করা হয়েছিল। তারা বলেন, একদিকে আমাদের জমি জোর পূর্বক জমি দখের চেষ্টা করছে, অপরদিকে আমাদের জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় আছি। যেকোন সময় আমাদের বড়ো ধরনের ক্ষতিসাধন করতে পারে তারা।
এবিষয়ে অভিযুক্ত সোনারগাঁ থানা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রউফ ও পিরোজপুর ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল জলিল বলেন, আমরা কারোর জমি দখল করতে যাইনি এবং আমাদের সেখানে কোন জমিও নাই। কে বা কারা এ ঘটনায় জড়িত তাও আমরা জানিনা। আমাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পুর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) রাশেদুল হাসান খান জানান, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।