খাগড়াছড়ির অবরোধ পুরোপুরি প্রত্যাহার

খাগড়াছড়ির অবরোধ পুরোপুরি প্রত্যাহার

খাগড়াছড়িতে মারমা কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগ তুলে চার দিন ধরে অবরোধ পালন করা হয়। পরে তা স্থগিতের পর এবার পুরো প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে জুম্ম ছাত্রজনতা।

শনিবার (৪ অক্টোবর) সকালের দিকে জুম্ম ছাত্রজনতার মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অবরোধ প্রত্যাহারের এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

শহীদদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী পুণ্যকর্ম সম্পাদন, আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি মানবিক সহায়তা প্রদান এবং প্রশাসনের আশ্বাসকে আংশিক বিবেচনায় রেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, খাগড়াছড়ি ও গুইমারার সাম্প্রতিক সহিংসতা নিয়ে ১ অক্টোবর খাগাড়ছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক ও খাগাড়ছড়ির পুলিশ সুপার ছাড়াও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় জুম্ম ছাত্র-জনতার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে আমরা স্পষ্টভাবে আমাদের ৮ দফা দাবি, ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার এবং সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি। আলোচনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবিসমূহ বাস্তবায়নের আশ্বাস প্রদান করা হয় এবং শহীদ পরিবারের প্রতি নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা প্রদান করার বিষয়টি জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দ্বিতীয় দফার বৈঠক শেষে জুম্ম ছাত্র-জনতার সর্বস্মতসিদ্ধান্ত ক্রমে শহীদদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী পুণ্যকর্ম সম্পাদন, আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি মানবিক সহায়তা প্রদান এবং প্রশাসনের আশ্বাসকে আংশিক বিবেচনায় রেখে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত ঘোষিত স্থগিত অবরোধ কর্মসূচি আপাতত প্রত্যাহার করা হলো।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিবৃতিতে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’ প্লাটফর্ম এবং অন্যতম সমন্বয়ক উক্যনু মারমাকে ইউপিডিএফ সংশ্লিষ্ট হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, সেই ‘ট্যাগ’ অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। একইসঙ্গে অনলাইনে পাহাড় সম্পর্কে যারা গুজব ও বিভ্রান্তিকর প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টায় প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ওই দিন রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় একটি ক্ষেত থেকে তাকে উদ্ধার করেন স্বজনরা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন। পরদিন সেনাবাহিনীর সহায়তায় সন্দেহভাজন যুবক শয়ন শীলকে (১৯) আটক করে পুলিশ।

এ ঘটনায় গেল শুক্রবার আধাবেলা সড়ক অবরোধ পালন শেষে টানা চার দিন সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ পালন করে জুম্ম ছাত্রজনতা। রোববার খাগড়াছড়ির গুইমারায় ১৪৪ ধারার মধ্যেই দুষ্কৃতকারীদের হামলায় ৩ পাহাড়ি যুব নিহত হয়েছে। এ সময় সিন্দুকছড়ি জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর মো. মাজহার হোসেন রাব্বানীসহ ১৩ জন সেনাসদস্য, গুইমারা থানার ওসিসহ ৩ জন পুলিশ সদস্যসহ ২০ জন আহত হয়েছে। এদিকে সৃষ্ট ঘটনার তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন।

এদিকে খাগড়াছড়ি সদরের সিঙ্গিনালায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সহিংসতা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা ও রামসু বাজার হত্যাকাণ্ডে পৃথক তিনটি মামলা করেছে পুলিশ। এর মধ্যে গুইমারার রামসু বাজার সহিংসতায় হত্যাকাণ্ড ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত ২৫০-৩০০ জনকে আসামি করে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে। অন্যদিকে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ভাঙচুর, দাঙ্গা সৃষ্টি ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ৬০০-৭০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে খাগড়াছড়ি সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন খাগড়াছড়ি সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহরিয়ার।

জাতীয়

সারাদেশ

আন্তর্জাতিক

বিনোদন

খেলা

ডাকদূত – বিজ্ঞাপন – সার্কুলেশন শর্তাবলি ও নীতিমালা – গোপনীয়তা নীতি – যোগাযোগ – নিউজলেটার